আমরা জানি যে, যখন আমরা জিমে কিংবা আউটডোরে ট্রেনিং করে থাকি আমরা সচরাচর সময়ে অসময়ে অনেক ধরনের মাসল সোরনেস এর শিকার হয়ে থাকি। এটা দুই ধরনের হতে পারে।
একটা হলো – একিউট মাসল (টাইট মাসল) এবং অন্যটি হলো ডিলেইড অনসেট (দেরিতে ব্যাথা)। সাধারনত এই দুই ধরনের মাসল পেইন হতে পারে আমাদের। তাই আজকে আমরা জানবো যে, কিভাবে মাসল পেইন মোকাবেলা করা যায় ওয়ার্কআউট থেকে সেটা নিয়ে আলোচনা করবো।
হাইড্রেটঃ ব্যায়ামের সময় এবং পরে অবশ্যই আপনাকে মেক সিউর করতে হবে যে, আপনি পর্যাপ্ত পরিমান পানি ইন্টেক করছেন বডিতে। পানির ঘাটতি কিংবা পানিশুন্যতার কারনে আপনার মাসল স্পাজম অথবা মাসল সোর হতে পারে। পানি বডির সিস্টেমের মাধ্যমে লিকুইডগুলো সচল রাখে, যা ইনফ্ল্যামেশন রোধ করে,বর্জ্য পণ্যগুলিকে ফ্লাশ করে এবং আপনার মাসলগুলিতে নিউট্রিশন সাপ্লাই করে।
এক্টিভ কুল্ডাউনঃ মাসল সোরনেস এর জন্য কুল্ডাউন হলো অন্যতম। কুল্ডাউনের মাধ্যমে আমরা আমাদের ব্যাথা রিলিজ করতে পারি। কুল্ডাউন এর ফলে আমাদের রক্ত সঞ্চালন বৃদ্ধি পায় এবং রিকভারি করা যায় দ্রুত।
প্রোটিনঃ এই ক্ষেত্রে প্রোটিন এর বিকপ্ল নেই। অনেকগুলো এমাইনো এসিড এর মাধ্যমে প্রোটিন তৈরি হয়, যা আমাদের প্রোটিন থেকে বডি রিকভার করা হয়, আমাদের ডেইলি খাবারে প্রোটিন সোর্স থাকতে হবে, যেমনঃ ডিম, দুধ, মাছ, চিকেন, লিন বিফ, বাদাম, শিমের বীজ ইত্যাদি। এছাড়াও আপনি হোয়ে প্রোটিন, বিসিএএ খেতে পারেন।
বডী ম্যাসাজঃ ব্যায়াম-পরবর্তী বা পোস্ট ওয়ার্কআউট এর পর ম্যাসাজ করলে বডীতে সাইটোকাইন কম্পাউন্ড নামক যা শরীরে ইনফ্লামেশন সৃষ্টিকারী ক্ষরণ কমিয়ে ব্যথাকে উল্লেখযোগ্যভাবে কমায়। এবং একই সময়ে ম্যাসাজ এর মাধ্যমে কোষে মাইটোকন্ড্রিয়াকে সিমুলেন্ট করে, সেল/কোষ ফাংশনকে প্রোমট এবং রিপেয়ার করে থাকে।
ফোম রোলিংঃ ফোম রোলিং হলো একটা সেলফ- মাইয়ো ফ্যাসিয়াল টেকনিক (SMR)। এটা মাসল টাইটনেস, সোরনেস, ইনফ্লামেশন রোধ করতে এবং এবং আপনার জয়েন্টের রেঞ্জ অফ মোশন বাড়াতে হেল্প করে থাকে। মাসল পেইনের জন্য ফোম রোলার হলো ওয়ান অফ দ্যা বেস্ট অপশন। আপনি ঠিক যেখানে ব্যাথা অনুভব করবেন ঠিক সেই জায়গাটাকে টার্গেট করে আপনি রোলিং করতে পারেন যাতে করে আপনার টিস্যুগুলা এক্টিভ হয় এবং একই সাথে টিস্যু ডিস্কানেক্ট হলে সেটা পুনরায় রিপেয়ার হতে সাহায্য করে। এছাড়াও মাসল এক্টিভেট করার জন্য ফোম রোলার দারুন জিনিস। ব্যায়ামের আগে এবং পরে আপনার ওয়ার্ম-আপ বা কুলডাউন যোগ করার জন্য ফোম রোলিং একটি কার্যকর হাতিয়ার হতে পারে।
হিটিং প্যাড ব্যাবহারঃ হিটিং প্যাডের মাধ্যমে আপনি আপনার মাসল পেইন রিডিউস করতে পারবেন। এটা আমাদের বডিতে রক্ত সঞ্চালন করতে হেল্প করে কারণ এটি একটি ভাসোডিলেটর (আপনার রক্তনালীগুলি খুলে দেয়), এবং মনে করা হয় যে এটি মাসল পেইনের সাথে সম্পর্কিত কিছু ইনফ্লামেশন মাসল থেকে ফ্লাশ করতে সাহায্য করে। তাই হিটিং প্যাডের মাধ্যমে আমরা আমাদের ব্যাথা দূর করতে পারি।
এন্টি-অক্সিডেন্ট ফূডঃ মাসলে পেইন রিলিফের জন্য এন্টি-অক্সিডেন্ট ফূড এর বিকল্প নেই। এন্টিওক্সিডেন্ট ফুড হিসেবে ওয়াটারমেলন গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা পালন করে থাকে।যেহেতু ওয়াটারমেলনে রিচ এমাইনো এসিড থাকে যার নাম L-Citrulline যা আমাদের হার্টরেট রিকভারি এবং মাসল সোরনেস কমাতে অনেক হেল্প করে থাকে। এছাড়াও ইনফ্ল্যামেটরি ফুড যেমন পাইন অ্যাপল, চেরি এবং জিঞ্জার জুইস আপনারা খেতে পারেন।
এন্টি-অক্সিডেন্ট সাপ্লিমেন্টঃ কারকিউমিন নামক সাপ্লিমেন্টে অনেক পাওয়ারফুল এন্টি-অক্সিডেন্ট এক্টিভ ইনগ্রিডিয়েন্টস আছে যেটা আমরা টারমারিক/হলুদ থেকে পেয়ে থাকি। এটা নিসন্দেহে আমাদের পেইন রিলিফে অনেক হেল্প করে থাকে। এছাড়াও যারা নিয়মিত ওয়ার্কআউট করে তাদের অন্যতম এসেনশিয়াল সাপ্লিমেন্ট হলো ওমগে-৩/ ফিশ অয়েল অথবা ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড। এটা আমাদের জয়েন্ট পেইন, মাসল পেইন, ব্রেইন ফাংশনে ভুমিকা রাখে। আইডিয়াল প্রোডাক্ট সোর্স হিসেবে “Nutrition Depot” এর সাথে কন্টাক্ট করতে পারেন।
কম্প্রেশন পোশাকঃ এই ধরনের পোশাকে যখন আপনি জিমে ওয়ার্কআউট করবেন, এটা আপনাকে ব্ল্যাড ফ্লো CIRCULAT করতে হেল্প করে। যা ল্যাকটিক অ্যাসিড তৈরিকে সহজ করে এবং Delayed Onset Muscle Soreness (DOMS-দেরিতে ব্যাথা) কমায়। এমনকি ওয়ার্কআউটের পরেও কম্প্রেশন পরলে রক্ত সঞ্চালন সচল করতে সাহায্য করে যাতে ল্যাকটিক অ্যাসিড সেট না হয়, আবার DOMS হওয়ার সম্ভাবনা হ্রাস করে।
ওয়ার্কআউটঃ ট্রেনিং হিসেবে আপনি ইয়োগা, রেসিস্ট্যান্স ব্যান্ড মুভমেন্ট, কুল্ডাউন, স্ট্রেচিং, জয়েন্ট মবিলিটি ইত্যাদি ট্রেনিং করতে পারেন যা আপনার বডিতে রক্ত সঞ্চালনে হেল্প করবে এবং একই সাথে আপনার মাসল পেইন রিলিজ করতে হেল্প করবে। অবশেষে, উপরে উল্লেখযোগ্য বিষয় গুলো জেনে রাখলে আশা করি আপনারা সবাই নিজেকে মাসল সোরনেস/ মাসল পেইন থেকে সেইফ করতে পারবেন।
রাইটারঃ অনিত অধিকারী।