Fasting, Training, Nutrition and Healthy lifestyle during Ramadan 2022

FITNESS During Ramadan
কিভাবে রমজান মাসে আমরা আমাদের ফিট এবং সুস্থ রাখতে পারি?

রমজান কি?
ইসলামিক ক্যালেন্ডার একটি চন্দ্র ক্যালেন্ডার এবং রমজান নবম মাস হিসাবে পড়ে। রমজানে প্রতিদিনের রোজা থাকে এবং ভোর থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনো খাবার বা পানীয় না খেয়ে রোজা বা উপবাস থাকতে হয়। সূর্যাস্ত,পরিবার এবং বন্ধুরা একত্রিত হয় এবং তাদের রোজা ভঙ্গ করে এবং ইফতার নামে পরিচিত ভোজ বা খাবার উপভোগ করে। বছরের পবিত্রতম মাস হিসাবে, এটি মুসলমানদের অনুশীলনের জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ সময়।

রোজা রাখার উপকারিতা:
রোজা রাখার ফলে আমাদের মেটাবলিজম ভালো থাকে এবং রক্ত চলাচলে অস্বাভাবিকতা, উচ্চ রক্তচাপের মতো বিভিন্ন রোগ থেকে আমাদের রক্ষা করে। রোজা ইউরিক অ্যাসিড এবং রক্তে ইউরিয়ার ঝুঁকিও কমায়। এটি শরীরে বেশি পরিমাণে থাকলে স্ট্রোক, হৃদরোগ, কিডনি রোগ এবং ডায়াবেটিসের মতো রোগ হতে পারে। এছাড়াও রোজা রাখায় অনেক ধর্মীয় এবং বৈজ্ঞানিক, উপকারিতা আছে।

আমরা যেসব চ্যালেঞ্জ আমরা সবচেয়ে বেশি ফেইস করে থাকিঃ
রোজা চলাকালীন সময় আমাদের বডী সবচেয়ে বেশি ক্ষুধা, ডিহাইড্রেটেট এবং ক্লান্ত থাকে। আমাদের নিশ্চিত করতে হবে যে এই ধরনের অনুভূতি আমাদেরকে বাধা দেয় না এবং এই বরকতময় মাসের সর্বোচ্চ সদ্ব্যবহার করা এবং নিজেদের প্রতি আমাদের দায়িত্ব পালন করা থেকে সৃষ্টিকর্তা এবং যাদের প্রতি আমরা দায়বদ্ধ থাকি।
ডিউরিং রমজান- হাইড্রেশন, খাবার প্ল্যান, ফাস্টিং এবং সেহরি টাইম ইত্যদি।

সারাদিন রোজা রাখার কারণে সৃষ্ট ক্ষুধার যন্ত্রণার কারণে মানুষ সাধারণত ইফতারের সময় রোজা ভাঙার সময় একবারে সব কিছু খেয়ে ফেলে। এবং শরীর সম্পূর্ণরূপে শক্তি গ্রহণ ব্যবহার করতে প্রায় অক্ষম। এটি আমাদের মেটাবলিজম কমিয়ে দিতে এবং ওজন বাড়ার অন্যতম কারণ হতে পারে।

মানুষ আরেকটি কমন ভুল করে থাকে তা হল ঘুমাতে যাওয়ার আগে তাদের ক্ষুধা নিবারণের জন্য ইফতারের পরে প্রচুর স্ন্যাকস খাওয়া। তারা প্রায়ই সেহরি বাদ দেয় এবং পরবর্তী ইফতার পর্যন্ত ক্ষুধার্ত থাকে। সেহরির সময় না খাওয়া বা শোবার আগে এত বেশি খাওয়া পরের দিন মারাত্মক ডিহাইড্রেশন এবং লো ব্লাড সুগারের সমস্যা সৃষ্টি করতে পারে।

রমাজন চলাকালীন সময় আপনারা হোল গ্রেইন জাতীয় খাবার যেমনঃ ব্রাউন রাইস, ব্রাউন রুটি, ছোলা, ডাল ইত্যাদি খাবার চয়েস করুন, যা শরীরকে শক্তি এবং ফাইবার সরবরাহ করতে সাহায্য করে থাকে। স্বাস্থ্যকর প্রোটিনের একটি ভাল অংশ পেতে গ্রিলড বা বেকড চর্বিহীন মাংস, চামড়াবিহীন চিকেন এবং মাছ উপভোগ করুন। এছাড়াও ফল এবং শাকসবজি জাতীয় খাবার তালিকায় রাখতে হবে যাতে করে ভাইটামিনস এবং মিনারেল এর ঘাটতি পূরণ হয়।

এবং সাধারণভাবেই, চর্বি বা চিনি জাতীয়, বেশি ভাজাপোড়া, প্রসেসড বা প্রক্রিয়াজাত খাবার এড়িয়ে চলুন। আপনি আপনার সাস্থ্যকর খাবার উপভোগ করুন এবং ধীরে ধীরে খাওয়ার মাধ্যমে অতিরিক্ত খাওয়া এড়িয়ে চলুন।

ট্রেইনিং টাইমঃ এটা নির্ভর করে একটা ব্যাক্তির লাইস্টাইল কিংবা রমজানের সময় তার নিজস্ব স্বাধীন সময়। এটা কয়েকটা ভাগে ভাগ করতে পারি, যেমনঃ

১। যেহেতু আমাদের বডি সারাদিনই ক্লান্ত থাকে তাই আপনি চাইলে ইফতারের ৬০ থেকে ৯০ মিনিট আগে কিছু লাইট ওয়ার্কউট করতে পারেন। যাদের ফিটনেস গোল ওজন কমানোর দিকে তাদের জন্য এই টাইমটা আইডিয়াল।

২। আরেকটা অপশন হল ইফাতারের পর। ইফাতারের ১-২ ঘন্টা পর আমাদের বডি খাবারের মাধ্যমে ফুয়েলড আপ থাকে এবং ট্রেনিং এর জন্য রেডি থাকে। তাই যারা ওয়েট ট্রেনিং করতে চান, মাসল বল্ডীং ট্রেনিং করতে চান তাদের জন্য এই সময় টা আইডীয়াল টাইম।

৩। আরেকটা উত্তম সময় হলো ঠিক ভোর ৩ টা থেকে ৪ টার মধ্যে। তার আগে রাতে ডিনার এর মাধ্যেমে আমাদের বডি এনার্জিটিক থাকে এবং বডীও প্রপার রেস্পন্স করে থাকে আগামী ট্রেনিং এর জন্য। আপনি যদি খালি পেটেও থাকেন তবুও এই সময়ে ট্রেনিং আমাদের জন্য একটা একটা উপযুক্ত সময়।

রমজানের সময় পর্যাপ্ত ঘুমঃ
আমাদের দৈনন্দিন স্বাস্থ্য, সুস্থতা এবং সারাদিন ভালোভাবে কাজ করার সাধারণ ক্ষমতা বজায় রাখতে পর্যাপ্ত ঘুম পাওয়া গুরুত্বপূর্ণ। পবিত্র মাসে, আমাদের স্বাভাবিক ঘুমের সময়সূচী সোসিয়াল মিডিয়া এবং কার্যকলাপের দ্বারা ব্যাহত হতে পারে, যা প্রায়শই গভীর রাত পর্যন্ত চলে। আমাদের ঘুম এবং খাওয়ার অভ্যাস পরিবর্তন করে। এটি আমাদের বায়োলজিক্যাল টাইমকে বিপর্যস্ত করতে পারে এবং আমাদের সাধারণ স্বাস্থ্যকে বিভিন্ন উপায়ে প্রভাবিত করতে পারে।

ইফতারের পর রাতে অন্তত ৪ ঘণ্টা ঘুমানোর চেষ্টা করুন, সেহরি ও ফজরের জন্য ঘুম থেকে ওঠার আগে এবং সামনের দিনের জন্য ঘুম থেকে ওঠার আগে আরো ২ ঘন্টা ঘুমিয়ে নিন। রমজানের জন্য একটি সামঞ্জস্যপূর্ণ ঘুমের রুটিন পরিকল্পনা করার চেষ্টা করুন যাতে আপনি প্রতিদিন একই সময়ে ঘুমান এবং জেগে উঠছেন।

বেস্ট সাপ্লিমেন্ট ডিউরিং রমজান মাসঃ
– বিসিএএ (BCAA) এনার্জি: ওয়ার্কআউটের আগে পরে বা ওয়ার্কআউটের সময় হাইড্রেশন এবং হালকা এনার্জি দিতে সাহায্য করে থাকে (আমরাএটা ডিউরিং ওয়ার্কআউট অথবা প্রি-ওয়ার্কআউট হিসেবেও ব্যবহার করতে পারি কারণ বিসিএএ তে বিভিন্ন আ্যমাইনো এসিড ছাড়াও ক্যাফেইন থাকে যা বিশেষভাবে রোজা রাখার সময় খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

– ম্যাস গেইনার: যারা রমজানে খুব বেশি ওজন কমিয়ে ফেলে এবং যাদের ফিটনেস গোল ওজন বাড়ানো তাদের জন্য এটি আসলে সহায়ক হতে পারে।

– মাল্টিভিটামিন এবং গ্রিনস সাপ্লিমেন্ট: রমজান মাসে আমাদের খাদ্য থেকে সমস্ত ভিটামিনস এবং মিনারেলস পাওয়া সম্ভব।

– ফিশ অয়েল: স্বাস্থ্যকর অপরিহার্য হেলদি ফ্যাট সামগ্রিক শারীরিক এবং মস্তিষ্কের কার্যকারিতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

– ভিটামিন ডি: আমরা সাধারণত খুব বেশি রোদে বের হই না, বিশেষ করে রমজান মাসে। তাই রমজান মাসে পরিমান মতো ভিটামিন ডি দরকার।

– ক্রিয়েটিন: আরও মাসল ম্যাস ধরে রাখতে ক্রিয়েটিন আমাদের সাহায্য করতে পারে।

– প্রোটিন পাউডার: প্রোটিনের প্রয়োজনীয়তা পূরণ করতে প্রোটিন পাউডার আমাদের সাহায্য করতে পারে যা আমরা রোজা রাখার সময় প্রোটিনের চাহিদা মেটানো কঠিন। তাই রেগুলার খাবার ডিম, মাছ, মাংসের পাশাপাশি প্রোটিন সাপ্লিমেন্ট এর বিকল্প নেই।

পোশাকঃ যারা হেলদি লাইফস্টাইল মেইনটেইন করতে চান তাদের জন্য পোশাক সিলেকশনে নরম কাপড় পরিধান করা খুভই যোগউপযোগী হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *